কোর্ট ম্যারেজ কি এবং এর আইনগত বৈধতা

আজকে আমরা আলোচনা করবো, খুব আলোচিত এবং কমন একটি টপিক নিয়ে সেটি হলো, কোর্ট ম্যারেজ কি এবং এর আইনগত কোন বৈধতা আছে কি না ?

প্রায়শই সাধারণ মানুষের মুখে কোর্ট ম্যারেজ এই টার্ম টির কথা শোনা যায় । বিশেষ করে যারা পরিবারের সম্মতি ছাড়াই বিয়ে করতে আগ্রহী হয়ে উঠে, তারা অনেক সময় আইনজীবিদের সাথে যোগাযোগ করেন কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য এবং তারা মনে করেন যে কোর্ট ম্যারেজ করলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায় । কিন্তু বিষয়টি কি আদোতে তাই ?

আমরা প্রথমেই জানবো যে কোর্ট ম্যারেজ কি ?
আইনে কোর্ট ম্যারেজ বলে কোন বিধান নেই এবং কোর্ট ম্যারেজ এর আইনগত কোন ভিত্তি নেই । কোর্ট ম্যারেজ এর নামে যা করা হয়, তা হচ্ছে একটি এফিডেভিড বা হলফনামা বা ঘোঘনা মাত্র ।
এই এফিডেভিড বা হলফনামায় ছেলে এবং মেয়ে অর্থাৎ বর কনে, একে অপরকে স্বামী এবং স্ত্রী হিসেবে ঘোষণা প্রদান করে মাত্র । এই এফিডেভিড বা হলফনামা কয়া হয় ৩০০ টাকার ননজুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে, যেখানে ছেলে মেয়ের স্বাক্ষর সহ একজন এডভোকেট এবং নোটারি পাবলিকের স্বাক্ষর থাকে ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, কোর্ট ম্যারেজ করলেই কি বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায় ?
আমরা আগেই জেনেছি যে, এটি একটি এফিডেভিড বা হলফনামা বা ঘোঘনা মাত্র । অর্থাৎ এই এফিডেভিড বা হলফনামার মাধ্যমে বর কনে নিজেদের মধ্যে বিয়ে হয়েছে মর্মে এবং তারা এক অপরকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দেন মাত্র।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে বর-কনের মধ্যে তাদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আইন অনুসারে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে । ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আইন অর্থাৎ বর কনের যে ধর্মের হবেন তাদের সেই ধর্মীয় রীতি নীতি অনুসরন করে বিয়ে করতে হবে ।
যেমন বর কনে মুসলিম হলে তাদের ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে করতে হবে এবং প্রচলিত আইন অনুসারে কাজীর মাধ্যমে বিয়ের কাবিননামা বা নিকাহনামা সম্পাদন করতে হবে ।
একই ভাবে হিন্দু বিয়ের ক্ষেত্রে হিন্দু ধর্মের রীতি নীতি অনুসারে বিয়ে করতে হবে এবং প্রচলিত আইন অনুসারে হিন্দু বিবাহ রেজিস্টার এর মাধ্যমে বিয়ে নিবন্ধন করার বিধান আছে, তবে এটা বাধ্যতামূলক নয় । এটা মুলত প্রয়োজন হয় বিয়ের প্রমান স্বরুপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ।
ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আইন অনুসারে বিয়ে করার পরে তাঁরা ইচ্ছা করলে এই হলফনামা করে রাখতে পারেন । ২০১৫ সালে আইন মন্ত্রালয় হতে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি এর মাধ্যমে জানানো হয় যে, নোটারী পাবলিক এফিডেভিডের মাধ্যমে বিয়ে পড়াতে বা নিবন্ধন করাতে পারেন না । নোটারী পাবলিকের এরুপ ঘোঘনার আইনগত কোন ভিত্তি নাই । সুতরাং ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিয়ে না করে শুধু হলফনামা সম্পন্ন করলে আইন অনুসারে বিয়ে হয়েছে এটা বলা যাবে না ।

Book a Quick Consultation Roy & Associates